কিম জং উনের অভিযোগ: পারমাণবিক যুদ্ধ উসকে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
- By Jamini Roy --
- 23 November, 2024
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে এবং কোরিয়া উপদ্বীপকে পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) এক সামরিক প্রদর্শনীতে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
কিম জং উন তাঁর বক্তব্যে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক মনোভাব প্রকাশ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, পিয়ংইয়ং সবসময়ই ওয়াশিংটনের প্রতিকূল নীতির শিকার। তিনি বলেন, "মার্কিন প্রশাসনের আচরণ আমাদের প্রতি সবসময় আগ্রাসী। তারা পারমাণবিক যুদ্ধ উসকে দিচ্ছে।"
কিম আরও বলেন, কোরিয়া উপদ্বীপ কখনও এতটা তীব্র ও বিপজ্জনক সংঘাতের মুখোমুখি হয়নি, যা ধ্বংসাত্মক থার্মোনিউক্লিয়ার যুদ্ধে রূপ নিতে পারে।
কিম তাঁর বক্তব্যে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ইতিহাস নিয়ে কথা বলেন। তিনি জানান, অতীতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় পিয়ংইয়ং অনেক ছাড় দিলেও ওয়াশিংটনের বৈরি মনোভাব বদলায়নি।
উত্তর কোরিয়ার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি আমলে হওয়া একাধিক বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, "আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় যতদূর যেতে পারি, গিয়েছি। কিন্তু তাদের বৈরি নীতি কখনও বদলায়নি।" তিনি এই নীতিকে পিয়ংইয়ংয়ের জন্য একটি "স্থায়ী হুমকি" হিসেবে চিহ্নিত করেন।
কিম তাঁর বক্তব্যে সতর্ক করে বলেন, "কোরিয়া উপদ্বীপে বিবাদমান পক্ষগুলো এখন এমন এক সংঘাতের মুখে রয়েছে যা পারমাণবিক যুদ্ধে পরিণত হতে পারে।"
বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধনীতি ও সামরিক উপস্থিতি প্রসঙ্গে কিম আরও বলেন, "ওয়াশিংটন সারা পৃথিবীতে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। তাদের এই মনোভাব থামানোর প্রয়োজন।"
উত্তর কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে কিম গভীর হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, "আমরা বারবার আলোচনা করেছি। কিন্তু এর কোনো কার্যকর ফল পাইনি। যুক্তরাষ্ট্রের বৈরি মনোভাব এবং আগ্রাসী নীতির কারণেই শান্তি স্থাপন সম্ভব হয়নি।"
কিম জং উনের মতে, পিয়ংইয়ং শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আচরণ উত্তর কোরিয়াকে প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান নিতে বাধ্য করছে।
কিমের এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে, যখন কোরিয়া উপদ্বীপে সামরিক উত্তেজনা চরমে। উত্তর কোরিয়া তার সামরিক শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
কেসিএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিম জং উন তাঁর বক্তব্যে এই সংঘাতের জন্য পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন।
বিশ্ব রাজনীতির এই উত্তপ্ত সময়ে কিমের বক্তব্য কোরিয়া উপদ্বীপে নতুন সংকট সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি বলে মত বিশেষজ্ঞদের।